ভূমি উন্নয়ন কর/খাজনা কি?
কোনো জমি ভোগ দখলের সুবিধা গ্রহণের জন্য সরকারকে প্রতি শতাংশ জমির জন্য প্রতি বছর যে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করতে হয় তাকেই ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা বলে ৷
খাজনা প্রদান বিষয়ে যা জেনে রাখা ভালো:
দাখিলা:ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে সমমূল্যের একটি খাজনা প্রদানের রশিদ কে বুঝায় ৷ খাজনা প্রদান করার পর খাজনা প্রদানকারী এরূপ একটি রশিদ পাওয়ার অধিকারী হয় উক্ত রশিদটি জমির স্বত্ব ও দখল প্রমাণের জন্য প্রাথমিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষ্য হিসাবে আদালতে গণ্য হয় ৷ এমনকি ব্যাংক ঋণ গ্রহণ বা বাড়ীর প্ল্যান পাশ করার ক্ষেত্রেও খাজনা প্রদানের রশিদটি প্রয়োজন হয়ে থাকে ৷ সুতরাং এক কথায় দাখিলা বলতে আমরা খাজনা প্রদানের রশিদকেই বুঝি যা মালিকানা বা স্বত্ব হাল নাগাদ করনের প্রমাণ পত্র বলে গণ্য ৷
মওকুফ দাখিলা:ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ হয়ে থাকলে উক্ত মওকুফাধীন কৃষি জমির মালিকগণ প্রতি খতিয়ানের জন্য ২/= টাকা হারে রশিদ খরচ দিয়ে মওকুফ দাখিলা গ্রহণ করতে পারবেন। উল্লেখ্য যে মওকুফ দাখিলা যে বছরের জন্য দেয়া হবে সেই বছর উল্লেখ করে এবং জমির শ্রেণী নিশ্চিত হয়ে দিতে হবে ৷
এজমালী জোতের আংশিক কর আদায় ও সার্টিফিকেট সংশোধন:যদি কোনো জমিতে এজমালী জোতের সহ অংশীদার থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে এজমালী জোতের সহ অংশীদারদের মধ্যে যে কোনো অংশীদারের ভূমি উন্নযন কর বা খাজনা আংশিকভাবে আদায় করা যাবে৷ যদি কোনো এজমালী জোত বা জমির উপর কোন সার্টিফিকেট মামলা দায়ের হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে যদি কোনো সহ অংশীদার তার অংশের খাজনা পরিশোধ করতে আগ্রহী হন সেক্ষেত্রে সহ অংশীদারের খাজনা গ্রহণ করে তার নাম সার্টিফিকেট মামলা থেকে বাদ দিয়ে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে হবে ৷
উক্ত আদেশটি ১২/৪/১৯৮৮ ইং তারিখর স্মারক নং-ভূ:ম:/শা-৩/১৫-৯১/৮৮/৪৩১, মতে কার্যকর করা হয়েছে ৷
ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা ৩ বছর পর্যন্ত অগ্রিম আদায় করা যাবে ৷
কৃষি জমির ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা ২ কিস্তিতে আদায় করা যেতে পারে ৷
১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনন্সি এক্টের ১৫১ ধারা এবং ১৯৭৬ সালের ভূমি উন্নয়ন করে অধ্যাদেশের ৩ (ক) ধারায় বলা হয়েছে যে, মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা, কবরস্থান, শ্মশান ঘাট, মাদ্রাসা ইত্যাদি যে জমির উপর অবস্থিত সেই জমির ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা ডেপুটি কালেক্টর বা জেলা প্রশাসক বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মওকুফ করে দিতে পারেন ৷
১৯৭৬ সালের ভূমি উন্নয়ন কর বিধিতেবলা হয়েছে প্রতি বছর রিটার্ণ-৩ পূরণ করার সময় তহসীলদারের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জমির শ্রেণী নির্বাচন বা পরিবর্তন করতে পারেন ৷ তবে খাস জমির শ্রেণী পরিবর্তনের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর অনুমোদন লাগবে ৷
১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনন্সি ১৪২ ধারায় বলা হয়েছে যে যদি এক বছরের ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা বাকী থাকে তাহলে যেক্ষেত্রে বকেয়া খাজনা আদায়ের জন্য সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করা যাবে কিন্তু যদি ৩ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের কর না হয় তাহলে আর সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করা যাবে না কারণ তা তামাদি দোষে বারিত হয়েছে বলে গণ্য হবে ৷
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস